বনসাই গাছের যত্ন এবং সংরক্ষণ
সার প্রয়োগ
বনসাই গাছের যত্ন এবং সংরক্ষণ এর সঠিক ভাবে বেড়ে উঠার জন্য এদেরকে নিয়মিত খাবার দেয়া অতি জরুরি। সাধারন গাছ সমূহ তাদের মূলকে মাটির অনেকটা অভ্যন্তরে বিস্তার করার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান সংগ্রহ করে। যেহেতু, এটি কে একটি ক্ষুদ্র পাত্রে স্থাপন করা হয় তাই এদের পক্ষে প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পরে। এদেরকে সার প্রদানের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় খাবারের অভাব পূরণ করতে হয়।
যেকোনো সারে ৩ টি প্রধান উপকরণ থাকে নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাশিয়াম আর এই প্রত্যেকটি উপাদানই আলাদা আলাদা কারণে ব্যাবহার করা হয়। নাইট্রোজেন পাতা এবং কাণ্ডের বর্ধনে সাহায্য করে, ফসফরাস স্বাস্থ্যবান মূল গঠনে এবং পটাশিয়াম ফুল ও ফলের বর্ধনে সহায়তা করে। বনসাই কে সার প্রদান করার সময় বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে একে এনপিকে (নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাশিয়াম) প্রয়োগ করতে হয়, যা এর বর্ধনের জন্য খুব দরকার।
বসন্তের শুরু থেকে শরতের মাঝামাঝি পর্যন্ত বনসাই এর বর্ধন কালীন সময়ে সবসময়ই সার দিতে হয়। ঘরের অভ্যন্তরের গাছ গুলোতে সবসময়ই সার দিতে হয়। তবে একটি বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে, পাত্রে স্থাপনের এক মাস অব্দি গাছে সার প্রয়োগ করা যায় না।
এটি গাছের জন্য সঠিক সার বাছাই করাটা অতি গুরুত্বপূর্ণ। বসন্তের শুরুতেই গাছের বৃদ্ধিকে তরান্বিত করার জন্য অধিক নাইট্রোজেন সম্বলিত সার দিতে হবে (এর অনুপাত হতে পারে এনঃপিঃকে=১২:৬:৬)। গ্রীষ্মের সময় সকল উপাদান সমপরিমাণে আছে এমন সার ব্যাবহার করতে হবে। যেমন এর অনুপাত হতে পারে, এনঃপিঃকে=১০:১০:১০। এবং শরৎ কালে গাছকে আগত শীতের জন্য শক্তিশালী করে তোলার লক্ষে এনঃপিঃকে=০৩:১০:১০ এই অনুপাতের সার ব্যাবহার করা যেতে পারে।
তবে এর বেতিক্রম হতে পারে, যদি গাছে দ্রুত ফুল ফুটানো প্রয়োজন হয় তবে গাছে অধিক নাইট্রোজেন সম্বলিত সার দিতে হবে এবং গাছ যদি অনেক পুরাতন হয় তবে খেয়াল রাখতে হবে সারে নাইট্রোজেন এর পরিমান যেন কিছুটা কম থাকে। যদিও, “বনসাই সার” অন্যান্য সারের মতই তবে এই সার প্রয়োগে এর উপাদান সমুহের সঠিক বিন্যাস পাওয়া যায়। ব্যাবহার করার জন্য সারের তরল কিংবা কঠিন আকার কোন ব্যাপার না তবে সারের প্যকেটে দেয়া নির্দেশাবলী সঠিক ভাবে পালন করতে হবে।
এটি সার প্রদানের সময় এর প্যাকেটে বর্ণিত নির্দেশাবলী অনুযায়ী মাত্রা এবং পরিমান নির্ণয় করতে হবে। তবে যে সকল গাছ বনসাই এর প্রাথমিক পর্যায়ে আছে তাদের ক্ষেত্রে প্রদত্ত নির্দেশাবলীর থেকে কিছুটা কম মাত্রার সার প্রদান করতে হয় যেন তাদের বেড়ে উঠার মাত্রা ঠিক থাকে।
বনসাইকে পাত্রে স্থাপনঃ
গাছকে পাত্রে আবদ্ধ করে রেখে এবং অবশেষে একে নষ্ট করে ফেলতে না চাইলে এর নিয়মিত পাত্র প্রতিস্থাপন করতে হবে। পাত্রে প্রতিস্থাপনের ফলে বনসাই এর আকার ছোট হয়ে যায় না বরঞ্চ এর ফলে গাছ নিয়মিত নতুন খাদ্য উপাদান পায় যা একে বেড়ে উঠতে এবং দ্রুত ফুল ধরতে সাহায্য করে।
বনসাই কে পাত্রে প্রতিস্থাপনের বিষয়টি নির্ভর করে একে যে পাত্রে রাখা হয়েছে তার আকারের উপর এবং গাছের প্রজাতির উপর। দ্রুত বর্ধনশীল গাছকে প্রতি দুই বছর অন্তর অন্য পাত্রে প্রতিস্থাপন করতে হয় এমনকি কোন কোন গাছকে প্রতি বছর পাত্রে প্রতিস্থাপন করতে হবে। যেখানে, অধিক পুরাতন এবং পরিনত গাছকে প্রতি ৩ থেকে ৫ বছর অন্তর অন্তর অন্য পাত্রে প্রতিস্থাপন করতে হয়। পাত্রে প্রতিস্থাপন করার কোন নির্দিষ্ট সময় নেই তবে বসন্তের শুরুতেই গাছের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে এবং প্রয়োজন পরলে সেই সময়ই গাছকে অন্য পাত্রে প্রতিস্থাপন করতে হবে।
বসন্তের শুরুতেই বনসাইকে পাত্রে প্রতিস্থাপন করতে হয় কারন তখন গাছ গুলো সুপ্ত অবস্থায় থাকে। এই সময় প্রতিস্থাপন করলে গাছের ক্ষতি কম হয় এবং যদিও নুন্যতম কোন ক্ষতি হয়ও তা গাছ দ্রুত পুষিয়ে উঠতে পারে।
এই ক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে একটি বনসাই কে অন্য পাত্রে প্রতিস্থাপন কে ২ ভাগে ভাগ করা যায়-
১.Training pot to another training pot
২.Training pot to bonsai pot
Source
bonsaiempire.com/