ইউক্যালিপটাস গাছ কেন ক্ষতিকর
ইউক্যালিপটাস গাছ কেন ক্ষতিকর, ইউক্যালিপটাসে খুব দ্রুত বেড়ে (৫ বছরে প্রায় ৯২ মিটার) উঠার কারণে ও রোগবালাই কম দেখা যাওয়ায় এর জনপ্রিয়তা মোটামুটি ভালোই বলা চলে। ইউক্যালিপটাসের ভালো দিকগুলো জানা থাকলেও এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আমরা অনেকে অবহিত নই, আবার অনেকেই জেনেশুনেও এই গাছ রোপণ করছি। মূলত দ্রুত লাভের আশায় ইউক্যালিপটাস লাগিয়ে থাকি।
ছবিঃ Stock Photo – Tree burning – eucalyptus gumtree on fire
ইউক্যালিপটাস গাছ নিষিদ্ধ কেন
- দৈনিক একটি পূর্ণবয়স্ক গাছ ৪০ থেকে ৫০ লিটার পানি শোষণ করে মাটিকে নিরস ও শুষ্ক করে ফেলে।
- ১০-১২ ফুট সীমানার পানি শোষণ করার কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত নেমে যায়। যা সেচ সমস্যার সৃষ্টি করে।
- অতিরিক্ত পরিমাণ পুকুরের পানি দূষণ করে।এর আশেপাশে অন্য প্রজাতির গাছ লাগালে তা অপুষ্টির কারণে জন্মাতে পারেনা। শুধু তাই নয়, এই গাছের শেকড় মাটির গভীরে সর্বোচ্চ ৩০-৩৬ ফুট পর্যন্ত চলে যেতে পারে।
- পাতা এবং রেণু আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর।
- এই গাছগুলি পাখির বাসা বাঁধার উপযোগী নয়।
- বেশি পানি শোষণের ফলে আশপাশের জমি মরুভূমিতে পরিণত হয়। যার কারণে ২০-৩০ বছর পরও পাশাপাশি অন্য কোনো প্রজাতির গাছ জন্মাতে পারে না।
- কার্বন-ডাই অক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণ অতিরিক্ত হওয়ায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে।
- পাতা সহজে পঁচে মাটিতে মিশে না। এই কারণে দাবানল সৃষ্টির আশঙ্কা প্রকট, কাঠেও খুব দ্রুত আগুন ধরে যায়।
এছাড়াও এটি বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর কারণ, প্রথমত, বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ হওয়ার কারণে উর্বর জমির উপর নির্ভর করতে হয়। দ্বিতীয়ত, এই গাছ উত্তরবঙ্গে বেশী লক্ষ্য করা যায়, এমনিতে শুষ্ক মৌসুমে সেখানে খরার সৃষ্টি হয়, এই প্রজাতির বিস্তার ভয়ংকরতম কাজে পরিণত হয়। সর্বশেষ, বাংলাদেশের অবস্থান সাব-ট্রপিক্যাল রিজিয়নে হওয়ায় এদেশের স্যাঁতসেঁতে পরিবেশের সাথে সুপরিচিত স্থানীয় বৃক্ষাদি জন্মাতে পারেনা।
ইউক্যালিপটাসের কিছু ভালো দিক আছে। যেমন
- এই গাছের তেল এন্টিসেপ্টিক ও পরিষ্কারক উৎপন্নে ববহৃত হয়।
- মশা তাড়াতে কাজে দেয়।
- এর পাতায় এক ধরণের ওষধি উপাদান রয়েছে, যার নাম ফরমালিটেড ফ্লোরোগ্লুসিনল
- দ্রুত উতপাদনশীলতার কারণে কাগজ শিল্পে বেশ কাজে দেয়।
কেনিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকাতে এই গাছ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আমাদের দেশেও ২০০৮ সালে ইউক্যালিপটাসের চারা উৎপাদন নিষিদ্ধ করা হয়।