ট্যাং ফল এর উপকারিতা

ট্যাং ফল এর উপকারিতা

ট্যাং ফল এর উপকারিতা রয়েছে। গত কয়েক বছরে  বেশ কিছু বিদেশি ফল এদেশেও  জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, প্যাশন ফল তার মধ্যে একটি ,যার অন্য নাম ট্যাং ফল ।  এ বিদেশি ফলটির গুঁড়া পানিতে গুলে আমরা অতি তৃপ্তি সহকারে পান করে থাকি। বিদেশ থেকে এ ফলের প্রক্রিয়াজাত গুঁড়া আমদানি করতে আমাদের অনেক খরচ হয়। কিন্তু খুবই সৌভাগ্যের বিষয় হল এদেশেও এই ফলের চাষ করা যায় এবং পাকা ফলের রস পান করে অতি সহজেই ভিটামিন সি ও লৌহজনিত খাদ্যের অভাব পূরণ করা যায়।

প্যাশন ফল গাছের বর্ণনা :

লতাজাতীয় এই গাছটি  মাচার ওপর অথবা অন্য কোন অবলম্বনকে আঁকড়ে ধরে  বিস্তার লাভ করে। এর  কান্ড নরম বিধায় নিজেই মাটির ওপর শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে না। তাই আমাদের দেশে লাউ এর মাচার মতো ব্যবস্থা করে দিলে অতি সহজেই ট্যাং গাছে ফল ধরে। লতা জাতীয় এ উদ্ভিদটি বহু বর্ষজীবী। রোপণের মাত্র ২-২.৫ বছরের মধ্যে গাছে ফল ধরতে শুরু করে এবং ২-৩ মাসের মধ্যে ফল পাকতে শুরু করে। ফল পাকলে হলুদ হয়ে যায়।

 

প্যাশন ফল গাছ

ফল দেখতে অনেকটা আপেলের মতো গোলাকার ধরনের। লম্বা বোঁটাতে ফলগুলো ঝুলতে থাকে।  ফল যখন পাকতে শুরু করে ফলের গায়ের স্পটগুলো হলুদ বর্ণ ধারণ করে। তখন আর সাদা স্পটগুলোর বর্ণ সাদা থাকে না। ফল কাঁচা অবস্থায় বেশ শক্ত থাকে। ফল পেকে গেলে প্রথমে নিচের অংশ ও পরবর্তীতে ওপরের অংশ নরম হয়। সেপ্টেম্বরের দিকে গাছে ফুল আসতে শুরু করে এবং ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে ফল পাকতে শুরু করে। তবে জাত ভেদে এর সামান্য তারমম্য হয়ে থাকে।

প্যাশন ফল চাষ পদ্ধতি

বাংলাদেশের যে কোন এলাকায় এ গাছের চাষ করা যায়। তবে দো-আঁশ বা বেলে-দো-আঁশ মাটিতে ভালো জন্মায়। বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে  সহজেই  নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারে। পঁচা  জৈব সার ও সামান্য পরিমাণ ইউরিয়া, টিএসপি ও এমপি সার প্রয়োগ করলে অতি তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। শুধু রোপণের সময় রাসায়নিক সার ব্যবহার করলেই হয়। পরবর্তীতে আর সার প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয় না।

প্যাশন ফলের উপকারিতা

প্যাশন ফলের রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা  স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধী।ওজন কমাতেও এটি সাহায্য করে।এক গ্লাস প্যাশন ফলের রস  নার্ভ কে শান্ত করবে ফলে মন প্রশান্তি লাভ করবে।এছাড়া এ ফলের রসে আয়রন এবং ভিটামিন ডি’ও রয়েছে। এটি ক্যান্সার ,অ্যাজমা প্রতিরোধী বলে বিজ্ঞানীরা অভিমত দিয়েছেন।

ট্যাং ফলের রস সংগ্রহ করা :

এ ফলের রসে পাকা আমের ঘ্রাণ রয়েছে। ফলের মধ্যে ছোট ছোট অসংখ্য বীজ রয়েছে। প্রতিটি বীজকে ঘিরে রয়েছে হালকা হলুদ বর্ণের আবরন। বীজগুলো ফলের মধ্যে পরস্পর জড়াজড়ি করে অবস্থান করে।একটি পেয়ালার মধ্যে ফলের ভেতরের পরিপক্ব অংশ রেখে চামচ  দিয়ে বিচিগুলো বের করে রস সংগ্রহ করা যায়। হাত দিয়ে বীজ বের করার সময় হাতে মধুর মতো চটচটে ফলের রস লেগে যায়। হলুদ বর্ণের এ রস দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি খেতে সুস্বাদু। ফলের ভেতরকার পাকা হলুদ অংশ চটকিয়ে বীজ বের না করে পরিমাণ মতো চিনি ও পানি মিশিয়ে  ছাঁকুনি দিয়ে অতি সহজে বীজ আলাদা করা যাবে। এভাবে একটি ফল থেকে মাঝারি আকারের ২/৩ গ্লাস সরবত তৈরি করা যাবে।

প্যাশন_ফল  যেকোনো বয়সী মানুষ প্যাশন বা  ট্যাং ফলের রস তৃপ্তি সহকারে পান করে থাকে। ভিটামিন সি, আয়রন, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ এ ফলের চাষ করে আমরা অতি সহজেই ভিটামিন সি, ডি ও আয়রন জাতীয় খনিজের অভাব পূরণ করতে পারি। গোটা বাংলাদেশেই এ ফলের চাষ করা সম্ভব। এ ফলের চাষে তেমন কোন খরচ নেই বিধায় আমাদের দেশে বসতবাড়ির আঙিনায়, শিম, লাউ, বরবটি চাষের মতো ট্যাং এর চাষ করা যায়।

**আমি যদিও বিদেশি ফল এর প্রচার পছন্দ করি না তবে যেহেতু আমরা এর প্রক্রিয়া জাত গুঁড়া ব্যবহার করি,তার চাইতে  ভালো হয় যদি নিজেরাই বাড়ির আসে পাশে বা ছাদে এই গাছটি লাগাই আর বিশুদ্ধ রস্‌ পান করি,এতে যেমন পরিপূর্ণ পুষ্টি পাবো সাথে সাথে দেশ এর কিছু বৈদেশিক মুদ্রাও বাঁচাতে পারবো।**

..

 

Sell Your Product With Us

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Want to write on Methopoth? Submit your article here ...