স্ট্রবেরি চাষ পদ্ধতি
স্ট্রবেরি চাষ পদ্ধতি খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আমাদের দেশে ,আজকাল অনেকেই শখের বশেও বাড়িতে এটা চাষ করার চেষ্টা করছেন ,কিন্তু নিয়ম জানেন না তাদের জন্যে আমার আজকের লেখাটি ,আশা করি কিছুটা হলেও সবার কাজে আসবে,এটির জন্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে ইনফর্মেশন collect করতে গিয়ে আমিও ভাবছি করার চেষ্টা করবো ।
স্ট্রবেরী পরিচিতি:
স্ট্রবেরী একটি বীরুত জাতীয় বহুবর্ষ জীবি উদ্ভিদ। উদ্ভিদ মূল, কান্ড, পাতা, মুকুট এবং ধাবকে বিভক্ত। মুকুট থেকে ত্রিপল পাতা, ধাবক এবং পুষ্পধাবক বের হয়। পাতা: ত্রিপল, কিনারা খাঁজকাটা । ফুল: সাদা রং এবং ফুটন্ত অবস্থায় প্রায় ২.৫ সে.মি. হয়। ফল: স্ট্রবেরী ফল কে একিন বলে।আসলে উদ্ভিদ তাত্ত্বিক দিক থেকে স্ট্রবেরী আসলে ফল নয়, এটি অনেক ফলের বা একিনের সমষ্টি। ফল দেখতে অনেকটা লিচুর মত রসালো এবং নরম। কাচা ফলের রং সবুজ হলেও পাকা ফলের রং টুকটুকে লাল।
স্ট্রবেরি উপকারিতা
স্ট্রবেরীর পুষ্টিগুন:
স্ট্রবেরী জীবন রক্ষাকারী নানা পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ রসালো ও সুস্বাদু ফল। এতে আছে ভিটামিন-এ, সি, ই, ফলিক এ্যাসিড সেলেনিয়াম, ক্যালসিয়াম, পলিফেনল এলাজিক এ্যাসিড, ফেরালিক এ্যাসিড, কিয়ুমারিক এ্যাসিড কুয়েরসিটিন, জ্যান্তমাইসিন এবং ফাইটোষ্টেরল।
কেন খাবেন স্ট্রবেরী
এলাজিক এ্যাসিড ক্যান্সার প্রতিরোধী, প্রৌড়ত্ব প্রতিরোধী।এমনকি এইডস্ রোগ প্রতিরোধী হিসাবে প্রমান পাওয়া গেছে। মানব দেহের রূপ বর্ধনে স্ট্রবেরী ব্যাপক সহায়ক। রক্ত পরিশোধনেও স্ট্রবেরী সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সর্বোপরি স্ট্রবেরী মানব জাতির জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার এক নেয়ামত স্বরূপ ।এছাড়া আরও উপকার রয়েছে এই ফলের যা মহান আল্লাহ আমাদের দান করেছেন।
স্ট্রবেরী চাষের সঠিক ও সরল পদ্ধতি
স্ট্রবেরীর চাষ এর জন্য প্রয়োজনীয় আবহাওয়া:
২০-২৬ ডিগ্রি দিবা এবং ১২-১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাত্রি তাপমাত্রা দরকার গড় দিবা দৈর্ঘ্য ১২ ঘন্টা ও উজ্জল সূর্যালোক দিনের দৈর্ঘ্য ১৪ ঘন্টার কম হলে স্ট্রবেরীর ফুল আসতে শুরু করে শীতকালে বাংলাদেশের বেশীর ভাগ জায়গাতে এ ধরনের তাপমাত্রা বিরাজমান । দিনের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর বেশী হলে স্ট্রবেরী মারা যেতে পারে ।
স্ট্রবেরী চাষের জায়গা নির্বাচন :
উজ্জল সূর্যালোকিত খোলা মেলা ও উপযুক্ত পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা যুক্ত জমি ,ছায়া যুক্ত জায়গায় স্ট্রবেরী চাষ করা যাবে না।
মাটির ধরণ ও শোধন:
যে কোন ধরনের মাটিতে স্ট্রবেরী চাষ করা যাবে তবে বেলে-দোআশ মাটি স্ট্রবেরী চাষের জন্য সবচেয়ে ভাল হয়।বেগুন জাতীয় ফসল চাষের পর স্ট্রবেরী চাষের জন্য নির্বাচিত জমি অবশ্যই শোধন করতে হবে। বাংলাদেশের বেশীর ভাগ জমিতে বছর জুড়ে কোন না কোন ফসলের চাষ হয়। এর ফলে নানা ধরনের রোগ জীবানু দ্বারা জমি সংক্রামিত হয় । মাটি শোধনের জন্য বিভিন্ন ধরনের সার ব্যবহার করতে হয় যেমন: মিথাইল ব্রোমাইড ও ক্লোরোপিকরিন, ব্লিচিং পাউটার, ভরলেক্স, ভাপাম ইত্যাদি।
স্ট্রবেরির আধুনিক উৎপাদন কলাকৌশল
১. স্ট্রবেরী চারা রোপনের কমপক্ষে ১ মাস আগে বেড তৈরী করেতে হবে।
২. স্ট্রবেরী চাষের বেড এর আকৃতি হবে ১৫ ফিট × ৩ ফিট ।
৩. বেডের উচ্চতা ৪”-৬” হতে হবে।
৪. বেড উত্তর-দক্ষিণ বরাবর হওয়া আবশ্যক।
৫. বেড থেকে বেডের দুরত্ব হবে ২৪’’ ।
৬. প্রতি বেডে ৭০০ গ্রাম মিশ্রিতসার (৫ ভাগ নাইট্রোজেন, ৮ ভাগ ফসফেট ও ৬ ভাগ পটাশ ) অর্ধেক সার বেডের মাটিতে এবং অর্ধেক সার বেডের মাঝখানে ৪’’-৬’’ গভীর সোজা লাইনে প্রয়োগ করতে হবে ।
৭. বেডটি মাঝখানে সামান্য উচু এবং দুই পাশে ঢালু হতে হবে।
চারা রোপন পদ্ধতি :
তিন টি পদ্ধতিতে স্ট্রবেরী চারা লাগানো যায়।
. এক সারি পদ্ধতি ।
. বেড ও দুই সারি পদ্ধতি
. বেড ও কালো পলিথিন বা ধানের খড় মালটিং
আজ এই পর্যন্তই,যদি ভাল লাগে জানাতে দেরি করবেন না,আপনাদের উৎসাহই আমাদের অনুপ্রেরণা