বনসাই বানানোর পদ্ধতি | বনসাই গাছ

বনসাই বানানোর পদ্ধতি

আকর্ষণীয় সৌন্দর্যের জন্য গাছের চাহিদা বেশি। বনসাই বানানোর পদ্ধতি সাধারণ গাছ থেকে বনসাই গাছ তৈরি করতে শেখার জন্য মানুষকে চাপ দিচ্ছে।

বনসাই এমন একটি শিল্প যা শতাব্দী ধরে অধ্যয়ন করা হয়েছে এবং পরিমার্জিত হয়েছে, বনসাই বর্তমান কৃষি বিজ্ঞানে যেমন নতুন মাত্রা যোগ করেছে তেমনি আধুনিক বাড়িঘরের সৌন্দর্যকে করেছে সমৃদ্ধ। ঘরবাড়ি ছাড়াও অফিস আদালতেও বনসাই এর দেখা পাওয়া যায়। বনসাই এখন নিত্য দিনের উপাদান। সৌন্দর্যের পাশাপাশি আমাদের অক্সিজেন এর ঘাটতিও অনেকাংশে মিটিয়ে দিচ্ছে এই ছোট আকারের বনসাই।

 

আসুন বনসাই সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেই

 

বনসাই

বনসাই (বনজাই বা বানজাই) একটি জাপানিজ শব্দ যার শাব্দিক অর্থ টবে লাগানো গাছ । এই শিল্পটি এসেছে প্রাচীন চীনদেশের উদ্যানতত্ত্ব চর্চা থেকে, পরবর্তীতে জাপানি জেন বুদ্ধ গোষ্ঠী যেটিকে আরও উন্নত করে । এটি এক হাজার বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসছে । বনসাই তৈরির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, বৃক্ষের আদলে প্রকৃতির ক্ষুদ্র- রুপায়ন ও বাস্তব উপস্থাপনা । এটি প্রকৃতিকে নিজের মত ধরে রাখতে সাহায্য করে তবে ছোট আকারে।

বনসাই শব্দের আক্ষরিক বিশ্লেষণ

চীনের অতি প্রাচীন পাত্রজাত ক্ষুদে বৃক্ষায়ন কৌশল একটি জাপানি  শিল্পকলার নাম ধারণ করে হয়ে উঠেছে বনসাই । সংক্ষেপে, বনসাইয়ের সংজ্ঞা  দেওয়া যেতে পারে,

বন” [প্রথম অংশ] হচ্ছে টব বা ছোট পাত্র (“বড় পাত্র থেকে কেটে বা আলাদা করে নেয়া একটি ছোট্ট অংশ”) । “সাই” [শেষ অংশ] মানে মাটিতে পুঁতে দেয়া গাছ বা অন্য বেড়ে ওঠা উপকরন যেমন ডালপালা, শিকর বা বাকল । সুতরাং, বনসাইয়ের মানে দাঁড়ায় ছোট্ট পাত্রে লাগানো গাছ।

চারাগাছের প্রাকৃতিক বৃদ্ধিকে সীমিত করতে বা নির্দিষ্ট দিকে প্রবাহিত করতে নতুন কুঁড়ি কেটে দেওয়া, শাখা প্রশাখা বাড়ানো ও পেঁচিয়ে দেওয়া এবং সযত্নে সীমিত সার প্রয়োগের মত কৌশলগুলো ও ব্যবহৃত হয়। । সাধারণভাবে  এদের উচ্চতা  চার ফুটের(বা প্রায় এক মিটার)  মধ্যে  রাখা হয়,  কারন গাছটি বংশগতভাবে ছোট প্রকৃতির গাছপালা নয়।ছোট পাতাসহ গাছপালা  সহযেই নকশা করা যায়। আসলে, বনসাই তৈরিতে ব্যবহৃত হয় যেকোনো প্রজাতির কাষ্ঠল ডাল বা শাখা বিশিষ্ট গাছ, যা  থেকে শক্ত প্রশাখা বের হয় । এটি পাতাহীন বা অল্প পাতা  নিয়ে টবে ঠিকভাবে জন্মাতে পারে এবং শিকড়ের বেড়ে ওঠা ও খাদ্য সঞ্চয় কমিয়ে নিতে সক্ষম ।

আপনার আশেপাশে খুঁজে দেখুন, আপনার আঙ্গিনায়, নার্সারিতে, মাঠে ঘাঁটে, ঝোপঝাড়ে বা বনে বাদাড়ে জন্মানো জংলী গাছ দিয়ে শুরু করতে পারেন । সঠিক মৌসুমে যত্ন সহকারে সংগৃহীত উপকরণ দিয়ে আপনার কম্পজিশান আরম্ভ করুন । এক্ষেত্রে মূলত যারা ​​কোন রুপ প্রাথমিক  উপাদান তৈরি করতে পারে,বর্ধনশীল বা সুপ্ত ঋতুর  সময়  পাওয়া যায় এমন কিছু চারা বাছাই করুন।বেশীরভাগ দেশীয় উদ্ভিদ  বা বাইরের উদ্ভিদও ব্যবহার করা যাবে;তবে গ্রীষ্মমন্ডলীয় জলবায়ু থেকে প্রাপ্ত উদ্ভিদ গুলোর নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে প্রাপ্ত উদ্ভিদ গুলো থেকে কিছু  বেশী সুরক্ষার প্রয়োজন হয়।

 

সঠিক মৌসুমে যত্ন সহকারে সংগৃহীত উপকরণ দিয়ে সাজিয়ে নিন আপনার বনসাই মনের মত যেমন খুশি।

 

বনসাইয়ের আকার ভিত্তিতে শ্রেণীবিভাগ

বনসাই তৈরি করা হয় প্রকৃতির সংক্ষিপ্ত প্রতিরূপ হিসেবে। প্রকৃতির বিপরীত রূপকে নির্ধারিত উপায়ে এমনভাবে তুলে ধরা হয় যে, একটি বনসাই যত ছোট হতে থাকে (এমন কি মাত্র কয়েক ইঞ্চি/ সেন্টিমিটার) ততই বিমূর্ত হয়ে ওঠে । বনসাইয়ের নানা ধরনের শ্রেনীবিভাগ করা হয়েছে, যদিও এর সঠিক আকৃতি বিভাগ পরিষ্কার নয় । এসব শ্রেনীবিভাগ বনসাইয়ের বাহ্যিক ও উদ্ভিতগত বৈশিষ্ট্য বুঝতে সাহায্য করে । শ্রেণিবিন্যাস আসলে প্রকৃত গাছটি ওঠাতে কতজন মানুষ প্রয়োজন তার উপর নির্ভর করে।

আকৃতির বর্ধিত ক্রমে যদি বনসাই কে সাজানো হয় তাহলে শ্রেণিবিভাগ নিচের তালিকার মত দাঁড়ায়:

Keshitsubo: ১-৩” (৩-৪ সেমি.)

Shito:-৪” (৫-১০ সেমি.)

Mame: ২-৬” (৫-১৫ সেমি.)

Shohin: -৮” (১৩-২০ সেমি.)

Komono: -১০” (১৫-২৫ সেমি.)

Katade-mochi: ১০-১৮” (২৫-৪৬ সেমি.)

Chumono / Chiu: ১৬-৩৬” (৪১-৯১ সেমি.)

Omono / Dai: ৩০-৪৮” (৭৬-১২২ সেমি.)

Hachi-uye: ৪০-৬০” (১০২-১৫২ সেমি.)

Imperial: ৬০-৮০” (১৫২-২০৩ সেমি.)

যদিও বনসাই বানানোর পদ্ধতি গাছের সাভাবিক বৃদ্ধিকে সামান্য ব্যাহত করে কিন্তু পাশাপাশি বনসাই এর নান্দনিক সৌন্দর্য এবং শহর জীবনে এর প্রাকৃতিক গুণাবলী এর ব্যবহারকে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে। আকার এর ভিত্তিতে যেকোনো আকৃতির বাসা বাড়িতে এমনকি অফিস আদালতেও এর ব্যবহার দিনে দিনে বেড়ে চলছে।

..

বনসাই গাছের যত্ন এবং সংরক্ষণ বিষয়ে জানতে

বনসাই গাছের যত্ন এবং সংরক্ষণ

 

 

Sell Your Product With Us

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Want to write on Methopoth? Submit your article here ...